এইচ এস সি পরীক্ষা শেষে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম চট্টগ্রাম ঘুরতে যাব। আমাদের বন্ধুদের মাঝে একজন বন্ধু ছিলো চট্টগ্রামের। তার কথামত ঠিক করলাম ওর বাসায় উঠবো। যেমন কথা তেমন কাজ। ওই বন্ধুসহ আমরা ছিলাম ৫ জন। বেচারার রুমটা আমরা সবাই মিলে দখল করলাম। আর ঘুরে বেড়ালাম পতেনংগা, ফয়েজ লেক, বায়জিদ বোস্তামী আরো কত কি। এর মধ্যে একদিন ছিলো সীতাকুণ্ড ইকো পার্কের সুপ্তধারা ও সহস্রধারার জন্য। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক পাড়ি দিয়ে গহীন জংলের ওই রাস্তা গুলো বেশ নির্জন ছিলো। অনেকদূর পর পর একজন মানুষের সাথে দেখা হতো। কে মাঠে কাজ করছে, কেউ মাথায় কাঠ বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে আবার কেউ ফিরে আসছে ভ্রমণ শেষে।
সুপ্তধারা
সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে অবস্থিত দুটি ঝর্ণার একটি হল সুপ্তধারা ঝর্ণা। বর্ষাকাল ছাড়া বছরের বাকি সময় এই ঝর্ণায় পানি থাকে না। তাই শুস্ক মৌসুমে দূর থেকে দেখলে মনে হবে ঝর্ণায় কোন পানি নেই। তবে, ঝর্ণার কাছে গেলে সামান্য কিছু পানি পরতে দেখবেন। যদি বর্ষাকালে এখানে আসেন তবে ঝর্নাটিকে পানিতে পরিপূর্ণ অবস্থায় দেখতে পাবেন এবং ঝর্ণার সৌন্দর্য পুরোপুরি উপভোগ করতে পারবেন।
সহস্রধারা
সুপ্তধারা ঝর্ণা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটারের হাঁটা দূরত্বে সহস্রধারা ঝর্ণাটি অবস্থিত। সুপ্তধারা ঝর্ণার মত এই ঝর্ণাটিতেও শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। এই ঝর্ণাটি সুপ্তধারা ঝর্ণার পানি থেকেই সৃষ্ট। পাহাড়ের উপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে আপনাকে সহস্রধারা ঝর্ণার নীচে নামতে হবে। মনে রাখতে হবে ঝর্ণায় নামার কাজটি সহজ হলেও পাহাড়ে ওঠার কাজটি কিন্তু বেশ কঠিন এবং এজন্য আপনাকে প্রচুর শক্তি খরচ করতে হবে।
কিভাবে যাবেন
আপনাকে প্রথমেই কুমিল্লা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে পৌছাতে হবে। এই স্থানটি চট্রগ্রাম শহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার এবং সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চট্রগ্রাম থেকে ট্যাক্সি, সিএনজি অটোরিকশা, বাস অথবা ট্রেনে করে এখানে আসতে পারবেন। ট্রেনে আসতে হলে আগে থেকে সময়সূচী জেনে নেওয়াই ভাল। ট্রেনে করে সীতাকুণ্ড থেকে সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে ফিরতে পারবেন।
সিএনজি অটোরিকশায় চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ডে আসতে প্রায় ২৭০/- টাকা ভাড়া দিতে হবে। ইকো পার্ক থেকে ফেরার সময় সীতাকুণ্ড বাজারে আপনি প্রচুর সিএনজি অটোরিকশা পাবেন।